রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শহর হচ্ছে রাজশাহী জেলা। রাজশাহী জেলায় দর্শনীয় অনেক স্থান রয়েছে। প্রতিদিন এইসব দর্শনের স্থানে অনেক দর্শনার্থীর ভিড় জমে। রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে রয়েছে সাফিনা, পার্ক পুঠিয়া রাজবাড়ী,
রাজশাহীর কেন্দ্রীয় উদ্যান বা চিড়িয়াখানা, শহীদ জিয়া শিশু পার্ক, বাঘা মসজিদ, লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ, টি বাঁধ, আই বাধ, হাওয়াখানা, পদ্মা গার্ডেন ইত্যাদি অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে রাজশাহী জেলাতে। আজকের এই পোস্টে রাজশাহীর এসব দর্শনীয় স্থানসমূহ কিভাবে যাবেন, স্থানগুলো কোন জায়গায় অবস্থিত এবং সেখানে কি কি রয়েছে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সাফিনা পার্ক লিমিটেড
সাফিনা পার্ক রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিত। এই পার্কটি ২০১২ সালে স্থাপন করা হয়। এটি গোদাগাড়ী উপজেলার দ্বিগ্রামের খেজুরতলায় অবস্থিত। দৃষ্টিনন্দন এই পার্কটি সকলের কাছে পিকনিক স্পট হিসেবেই অধিক পরিচিত। এই পার্কটি দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন কারুকার্যে ভরপুর। মাত্র ২০ টাকায় টিকিট কেটেই আপনি পুরো পার্কটি ঘুরতে পারবেন। এখানে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা বিভিন্ন পশু পাখির মূর্তি রয়েছে।
কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ২টি লেক যেখানে স্পীড বোট ও নৌকা চলাচল করে। পুরো পার্কটি বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফল গাছে পরিপূর্ণ। শিশুদের জন্য দোলনা, ট্রেন, নাগরদোলা ও বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের মাধ্যম রয়েছে। দেশের প্রায় সব জেলা থেকে রাজশাহী জেলাতে আগমনের জন্য আকাশপথ, সড়কপথ, ও রেলপথে সুব্যবস্থা রয়েছে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান বা চিরিয়াখানা
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে চিরিয়াখানা অন্যতম। এটি ১৯৭২ সালে নির্মাণ করা হয়। রাজশাহী চিড়িয়াখানা আগে ঘর দৌড় বা রেসকোর্স মাঠ হিসেবে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ আমলে এখানে ঘর দৌড় প্রতিযোগিতা হতো। প্রায় 321 জায়গা জুড়ে এই পার্টি নির্মাণ করা হয়। এই পার্টি বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছ দ্বারা পরিবেশিত পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষা এই পার্কটিতে আনছক দর্শনার্থী প্রতিদিন ঘুরতে আসে এছাড়াও পিকনিকের জন্য দূর দূরান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী এখানে আসে।
আরো পড়ুনঃ জলবায়ু পরিবর্তনের কারন।
এই পার্টিতে বিভিন্ন ধরনের পশুপাখির মূর্তি জল পরীর মূর্তি নান্দনিক দৃষ্টি নন্দন ব্রিজ এছাড়া বিভিন্ন জীবন্ত পশুপাখি রয়েছে। যেমন কুমির হরিণ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ভাল্লুক বাঁদর ইত্যাদি জীবজন্তু রাজশাহীর কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানায় দেখতে পাওয়া যায়। এখানে টিকিট মূল্য মাত্র ২৫ টাকা। দেশের যে কোন জেলা থেকে রাজশাহী জেলাতে যাতায়াতের সুব্যবস্থা রয়েছে। রাজশাহীতে আসার পর রাজশাহীর জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা অবস্থিত।
পুঠিয়ার রাজবাড়ী
রাজশাহী জেলার প্রাচীন স্থাপত্য শৈলীর মধ্যে পুঠিয়ার রাজবাড়ী হল অন্যতম একটি স্থাপত্য। এটি মূলত রাণী হেমন্ত কুমারের বাসভবন। মহারানী হেমন্ত কুমারী দেবী এই প্রাসাদটি ও ১৮৯৫ সালে তার শাশুড়ির সম্মানার্থে নির্মাণ করেন। দৃষ্টিনন্দো নেই প্রায় সত্যি বিভিন্ন ধরনের স্থাপত্য শৈলী ও কারো কাছে ভরপুর। প্রাসাদের চারপাশে পরিখা খনন করা রয়েছে। এছাড়াও প্রাসাদের একটি নিজস্ব পুকুর রয়েছে আর অনেকগুলো মন্দির রয়েছে এই প্রাসাদের আশেপাশে।
এর মধ্যে অন্যতম এবং সবচেয়ে সুন্দর দৃষ্টিনন্দন মন্দির হল পুঠিয়া শিব মন্দির। মুঘল আমলের জমিদার দের মধ্যে পুঠিয়া রাজবাড়ী ছিল অন্যতম। রাজশাহী জেলা শহর হতে ৩২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে পুঠিয়ার রাজবাড়ির অবস্থান। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলা থেকে রাজশাহীতে আগমনের সুব্যবস্থা রয়েছে। রাজশাহীতে বাস বাস সিএনজি বা অন্য কোন গাড়িতে করে উঠিয়া তে যাওয়ার পর রাজশাহী নাটোর মহাসড়কের পাশে দৃষ্টিনন্দন এই প্রাসাদ দেখতে পাওয়া যায়।
বাঘা মসজিদ
বাঘা মসজিদ রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় অবস্থিত। এই মসজিদটি রাজশাহী জেলা শহর হতে প্রায় 40 কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বদিকে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত। মসজিদটি ১৫২৩ সালে নির্মাণ করা হয়। এই মসজিদটিতে প্রায় ১০ টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদটি অনেক পুরনো হাওয়ায় এটি বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বারবার এই মসজিদের সংস্কার করা হয়েছে। ১৮৯৭ সালে এই মসজিদের ১০ টি গম্বুজ ও চাঁদ ভূমিকম্পের ফলে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
এই কারণে এই ঐতিহাসিক এই মসজিদটির ছাদ ও গম্বুজ গুলো পুনরায় নির্মাণ করা হয়।। এই মসজিদের দেওয়াল গুলো নানা রকম কারুকার্য খচিত। মসজিদের সামনেই একটি মাজহার রয়েছে প্রায় ২৮০ বিঘা জায়গা জুড়ে ঐতিহাসিক বাঘা এই মসজিদের অবস্থান। এই মসজিদে যাওয়ার জন্য রাজশাহী শহর থেকে অটো সিএনজি বা পাশে করে বানেশ্বর পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। তারপর সেখান থেকে দক্ষিণ দিকের রাস্তা ধরে বাঘা রাজশাহী মহাসড়ক ধরে ঐতিহাসিক বাঘা এই মসজিদে পৌঁছানো যাবে।
লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ
লালন শাহ মুক্ত মঞ্চ রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্র জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এর অবস্থান। পদ্মা পাড়ের অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর এই জায়গাটি। ২০১৪ সালের রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয় র জনাব খায়রুজ্জামান লিটন এই মুক্তমঞ্চ টি স্থাপন করেন এবং এর নামকরণ করেন লালন শাহের নামে। প্রতিদিন অনেক অনেক মানুষ এই মুক্তা মঞ্চ পদ্মার পাড়ে ভ্রমণের জন্য আসে। পদ্মা পাড়ের এই অপরূপ সৌন্দর্য পদ্মার হাওয়া সকলের মন কেড়ে নিয়েছে।
মুক্তমঞ্চ এলাকা থেকে অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট থেকে আর কিছুদূর গেলেই মিলবে রাজশাহী শহরের পদ্মা নদীর তীব্রেশন আর একটি সুন্দর ভ্রমণের স্থান টিবাদ। এই ভাতটি রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ইংরেজি ১২ হাতের অক্ষর টি এর আকৃতিতে নির্মাণ করা হয়েছে। বাতিনগরীর ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হলেও পর্যটকদের মন কেড়ে নিয়েছে এই বাঁধ। এইভাবে দৃষ্টিনন্দন আলোক বাতিল হয়েছে, এশা পদ্মার পাড়ের ঝড়ো হাওয়া পদ্মা নদীর পানির কলকালানি এইসব পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বহু গুণে। টি বাঁধের মত রাজশাহীতে আরও একটি বাদ রয়েছে যার নাম আই বাধ। এটিও পদ্মা নদীর তীর হেসা রাজশাহী কোর্ট এলাকায় অবস্থিত।
মন্তব্য
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে কোনগুলো রয়েছে সেসব বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করে সাথে থাকুন।
Ridoy blog এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url