প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয় - সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয়
আমরা প্রায় বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন সেমাই,পায়েস,ক্ষীর ইত্যাদি তৈরিতে কিসমিস ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমাদের মধ্যে কয়জন কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে জানি। প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয়, কিসমিসে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে
কিসমিসের উপকারিতা কি কি এসব বিষয়ে আমি আজকের পোস্টে আলোচনা করব। প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয় এবং কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয়
ড্রাই ফ্রুটস এর মধ্যে কিসমিস খুবই উপকারী একটি খাবার। এতে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, মিনারেল, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির উৎস। কিসমিসের উপকারিতা গুলো হল:
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
কিসমিসে রয়েছে ফাইবার এর গুনাগুন ফলে কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখে সেবন করলে তা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ দূর করে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
রক্তচাপ বাড়ার প্রধান কারণ হলো সোডিয়াম। কিন্তু প্রতিদিন কিসমিস খেলে রক্তচাপ কমে কারণ কিসমিসের মধ্যে থাকে পটাশিয়াম আর পটাশিয়াম রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে
কিসমিস শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে খুবই ভূমিকা রাখে। কিসমিসে থাকা গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ওজন বৃদ্ধিতে কাজ করে। এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্বাস্থ্য তৈরিতে সহায়তা করে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। কিসমিসে এমন এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের ক্ষতিকারী ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- শরীরকে দূষণমুক্ত করে
শরীরকে বিষমুক্ত রাখতে কিসমিস ভেজানো পানির কোন বিকল্প নেই। সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস এবং এর পানি খেলে শরীর দূষণমুক্ত হয়। তাই দূষণমুক্ত সুস্থ শরীর পেতে হলে অবশ্যই নিয়মিত কিসমিস ভেজানো পানি পান করুন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
প্রতিদিন কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীভূত হয়। কিসমিসে রয়েছে ফাইবার সুক্রোজ ফ্রুকটুস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ যা শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। কিসমিস ভেজানো পানীয় এক্ষেত্রে অনেক উপকারি।
- রক্তশূন্যতা কমায়
আমরা জানি যে আইরন জাতীয় খাবার রক্তশূন্যতা পূরণ করে। কিসমিসের মধ্যে আয়রন রয়েছে যা শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে লাল রক্ত কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে শরীরের রক্তশূন্যতা পূরণ হয়।প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। কিসমিসের ভেতরে অনেক পুষ্টিগুণ জাতীয় উপাদান রয়েছে। কিন্তু কিসমিস খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর হতে পারে। তাই প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ জানা উচিত।
কিসমিসে থাকে ফাইবার সুক্রোজ ফ্রুটস ভিটামিন বি ইত্যাদি জাতীয় উপাদান। এগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনি জানেন যে কিসমিসে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিন্তু কিসমিস বেশি খাবার ফলে আপনার হজমে সমস্যাও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া উচিত। এর বেশি প্রতিদিন কিসমিস খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
কিসমিস খেলে কি মোটা হয়
মোটা হওয়ার জন্য বা শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। আপনি যত বেশি ক্যালরি গ্রহণ করবেন তত দ্রুত মোটা হবেন। কিসমিস এমন একটি খাবার যাতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালরি। বিশেষজ্ঞদের মতে ১০০ গ্রাম কিসমিসে সাধারণত ২৯৯ গ্রাম ক্যালরি থাকে। নির্দিষ্ট পরিমাপের বাইরে যদি কিসমিস খাওয়া যায় তাহলে ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
ফর্সা হওয়ার জন্য আমরা কত কিছুই না করি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে ভেজানো কিসমিস এবং তার পানি পান করেই ফর্সা হওয়া যায়। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বকের মৃতকোষ দূর করে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন সকালে ভেজানো কিসমিস এবং পানি খেলে আপনার ত্বক অবশ্যই উজ্জ্বল হবে।সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয়
কিসমিস কখন খাবেন সকালে না রাতে? উত্তরটি হল সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। কারণ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে আইরন প্রুপোজ মিনারেল ভিটামিন সি ভাইবার পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গুণাগুণ। কিসমিসে থাকা আয়রন আমাদের শরীরের রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, ফাইবার হজম শক্তিতে সহায়তা করে, এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।কিসমিস খেলে কি ওজন কমে
কিসমিস খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতেও পারে আবার কমতেও পারে। কিসমিসের মধ্যে থাকে ফাইবার শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কিন্তু এতে আয়রনও রয়েছে যা শরীরের ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে ওজন বৃদ্ধি করে। তাই আপনি যদি 40 থেকে 50 গ্রামের বেশি কিসমিস খান তাহলে আপনার ওজন অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে।
আর যদি প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টি কিসমিস খান তাহলে এর ভেতরে থাকা ফাইবার আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করবে কিন্তু ক্যালরির মাত্রা কম রাখবে। ফলে আপনার ওজন কমবে। অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। তেমনি কিসমিস শরীরের জন্য উপকারী হলেও
অতিরিক্ত কিসমিস খেলে কি হয়
অতিরিক্ত খাওয়া উচিত না। কিসমিসের মধ্যে ফাইবার থাকে যা হজমের জন্য উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেলে বদহজম ডায়রিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত কিসমিস খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে কারণ কিসমিসের মধ্যে থাকে আয়রন যা শরীরের রক্তকণিকা তৈরি করে।এছাড়াও যাদের ডায়াবেটিস জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের কিসমিস কম খাওয়া উচিত। কারণ কিসমিস শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়
Ridoy blog এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url